শিশুর খাবারে চিনি মেশাচ্ছেন, আপনিই কিন্তু নিজের সন্তানের বিপদ ডেকে আনছেন
স্বদেশ জার্নাল → প্রকাশ : 9 Aug 2022, 4:49:41 PM

২ বছরের কম বয়সী বাচ্চাগের খাবারে কখনওই চিনি মেশানো উচিত নয়। এছাড়াও অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ানোও উচিত নয়। এর ফলে বিভিন্ন রকম রোগ দানা বাঁধে শরীরে যা আপনার সন্তানের পক্ষে ক্ষতিকর।
কম বেশি প্রায় প্রতিটি শিশুই মিষ্টির প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট। বয়স বাড়ার সাথে সাথে যখন খবারের স্বাদ আস্বাদন করতে শেখে তখন থেকেই চিনির প্রতি যেন একটা অমোঘ প্রেম তৈরি হয়। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সেই প্রেমে একটু কাঠি করতে হবে। হ্যাঁ, দু বছরের কম বাচ্চাদর খাবারের তালিকায় চিনি বা চিনি জাতীয় কোনও কিছু রাখা একদমই উচিত নয়। এত অল্প বয়স থেকে চিনি খেলে নানা রকম সমস্যা তৈরি হয়। তাই আপনার সন্তানের চিনির সঙ্গে যতই মিষ্টি মধুর সম্পর্ক থাক না কেন, সন্তানকে সেই প্রেমের বেড়াজাল থেকে বেড় করে আনার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই। ভুলেও আপনার সন্তানের চিনির প্রিতি ভালবাসা, মোহ-মায়া দেখে গলে যাবেন না, মোটেই ভাববেন না যে, একটু মিষ্টি দিলে কী এমন ক্ষতি হয়। একটা কথা মনে রাখবেন, বিন্দুতে বিন্দুতেই কিন্তু সিন্ধু হয়....একটু একটু করে রোজ চিনি দিলেই সেটা কিন্তু পরে বড় কোনো সমস্যার কারন হয়ে দাঁড়াবে।
চিকিৎসকরা সব সময় বলেন, দু বছরের কম বয়সি শিশুদের খাদ্য তালিকায় কোনও রকম চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার রাখা একেবারই উচিত নয়। এই বয়সে বেশি চিনি খেলে পরবর্তী কালে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং টাইপ-টু ডায়াবিটিস -এর মত রোগ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। অল্প বয়স থেকে শিশুদের শর্করা যুক্ত খাবার খাওয়ালে সেটি তাদের বিকাশের পক্ষেও খুবই ক্ষতিকর হয়। যে সব শিশুরা প্রাথমিক পর্যায়ে প্রচুর চিনিযুক্ত খাবার খায়, অর্থাৎ তাদের খাওয়ানো হয় তাহলে অল্প বয়সেই স্থূলতা, কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং দাঁতের ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। উল্লেখ্য, ছোট থেকে যদি কোনও বাচ্চাকে মিষ্টি জাতীয় খাবারের অভ্যাস করানো তাহলে বড় বয়সেও সেই অভ্যাসটাই থেকে যায়।
বাজারের প্যাকেটজাত সিরাপ এবং ফলের রস কখনই আপনার ছোট বাচ্চাকে খাওয়াবেন না। কারন এতে অতিরিক্ত মাত্রায় শর্করা থাকে। এছাড়াও কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, বা চকলেট জাতীয় বিস্কুটে থেকেও নিজের সন্তানকে দূরে রাখার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। জন্মের পর প্রথম দুটো বছর শিশুদের সঠিক বৃদ্ধির জন্য প্রচুর পুষ্টি ও ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। বলা বাহুল্য,অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবারগুলো ক্যালোরি সমৃদ্ধ, কিন্তু তাতে পুষ্টির অনেকটাই ঘটতি থাকে। দুবছরের কম বয়সী শিশুদের খাবার পরিমানটা বেশ অল্পই হয়। তাই তাদের খাদ্য যাতে পুষ্টিগুণে ভরপুর হয় সেই দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া বাঞ্ছনীয়। দুবছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা যে ধরনের খাবার খায় তার ওপরই ভবিষ্যতে তাঁদের খাদ্যাভাস তৈরি হয়।
শিশুদের জন্য চিনি জাতীয় খাবার ঠিক নয় বলে তাদেরকে কখনই মিষ্টিজাত কোনও কিছু খেতে দেবেন না সেটাও কিন্তু আবার ঠিক নয়। মিষ্টিজাতীয় খাবারও দেবেন, তবে সেটা আপনাকে নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রাখতে হবে। যখন আপনি আপনার সন্তানের জন্য বাইরে থেকে কোনও খাবার কিনছেন তখন সেই খাবারে চিনির মাত্রা কতটা থাকছে সেটা অবশ্যই দেখে নেবেন। আর বাড়িতে তৈরি করা খাবারে চিনির পরিমান কম রাখারই চেষ্টা করবেন।
share:
