...
ব্রেকিং নিউজ
বরুড়া প্রতিদিনের ৬ষ্ঠ বর্ষ উপলক্ষে আনন্দ অনুষ্ঠান ⁜ কুমিল্লা ০৮ (বরুড়া) আসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন'র মনোনয়ন পত্র দাখিল ⁜ বরুড়ায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম'র বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন ⁜ বরুড়ায় নৌকার হাল ধরলেন এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম ⁜ বরুড়ায় ইউএনও'র নির্দেশে বাল্য বিবাহ বন্ধ হলো ⁜ বরুড়া উপজেলা জনকল্যাণ সমিতি ঢাকা'র আয়োজনে মেধা বৃত্তি প্রদান ⁜ বরুড়ায় মরহুম আবু তাহের ফাউন্ডেশন কর্তৃক অসুস্থ সাইফুল ইসলামের চিকিৎসায় আর্থিক অনুদান বিতরণ ⁜ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা ০৮(বরুড়া) আসনে ৫ নেতার দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ⁜ ফরিদপুরে হত্যা মামলায় পলাতক প্রধান আসামি গ্রেপ্তার ⁜ ব্রাহ্মণপাড়ায় গোমতী চরে শীতকালীন সবজির সমাহার ⁜

ফেনী সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

স্বদেশ জার্নাল → প্রকাশ : 8 Aug 2022, 5:59:21 PM

image06
logo

 

 

১৯২২ সালের ৮ আগষ্ট ফেনী কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ভৌগলিক ও অবস্থানগত কারণে ফেনী সরকারী কলেজের গুরুত্ব বাংলাদেশের দক্ষিণ পুর্বাঞ্চলের জনগণের নিকট অপরিসীম। সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা-দীক্ষায় ফেনী সরকারী কলেজ ইতোমধ্যে আলাদা বৈশিষ্ট্যে সমোজ্জল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িককালে তথা ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজ সারা দক্ষিণ পূর্ব বাংলায় ৪টি কলেজের মধ্যে একটি, অপর তিনটি হল চট্টগ্রাম কলেজ, ভিক্টোরিয়া কলেজ ও এম.সি কলেজ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত শ্রমজীবী মানুষ হতে শুরু করে বিদ্যোৎসাহী বিদগ্ধ, কৃতি শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি অনুকরণীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে আসছে।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯২২ সালের ৮ আগষ্ট এই কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও কলেজ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয় ১৯১৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বর। কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য ফেনী হাই ইংলিশ স্কুল( বর্তমানে সরকারী পাইলট হাই স্কুল) এর সেক্রেটারি বাবু রমনী মোহন গোস্বামী এর নিকট থেকে ০১/০৯/১৯১৯ তারিখে রেজুলেশনের মাধ্যমে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে ফেনী ও বিরিঞ্চি মৌজায় কলেজ বোর্ড অব ট্রাষ্টীগণের পক্ষে খাঁন বাহাদুর মৌলবী বজলুল হক ও শ্রীযুক্ত বাবু গুরু দাস কর ১০০ টাকা ৪ কিস্তিতে পরিষদের শর্তে ৫ বিঘা ১৮ কাঠা ভূমি গ্রহণ করেন। খান বাহাদুর মৌলবী বজলুল হক তখন ফেনী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ও ফেনী লোকাল বোর্ডের ( ১৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত) চেয়ারম্যান ছিলেন। ভূমি বুঝে পাওয়ার পর কলেজ কম্পাউন্ড ও হিন্দু - মুসলিম হোষ্টেল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে কলেজ প্রতিষ্ঠার সার্বিক কার্যক্রম এগুতে থাকে। ১৯২২ সালের ০৮ আগষ্ট একাডেমিক কর্মকাণ্ড শুরুর মাধ্যমে যা পূর্ণতা পায়।

ফেনী সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অনুসন্ধান করলে জানা যায়, তৎকালীন নোয়াখালী জেলার ফেনী মহাকুমার কতিপয় শিক্ষিত ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তির অক্লান্ত প্রয়াসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই উদ্যোক্তাদের প্রধান হলেন এ্যাডভোকেট মহেন্দ্র কুমার ঘোষ। তদানীন্তন নোয়াখালী জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রমনী মোহন গোস্বামী, তদানীন্তন ফেনী মহকুমা হাকিম ডি.এল.দে, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচ.ইস্ট্যাফল্টনের সহকারী খান বাহাদুর আবদুল আজিজ বি.এ অন্যতম। তাঁদের এই উদ্যোগকে তদানীন্তন বিভাগীয় স্কুল পরিদর্শক খান বাহাদুর আহসান উল্যাহ সমর্থন জানান এবং নানানভাবে সহযোগিতা করেন।

কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আরো যারা উদ্যোক্তা হিসাবে ভূমিকা রাখেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন রায় বাহাদুর ব্যারিষ্টার যশোদা কুমার ঘোষ, এ্যাডভোকেট বারোদা প্রসন্ন দাস, এ্যাডভোকেট গুরুদাস কর, এ্যাডভোকেট চন্দ্রকান্ত দত্ত, আবদুল গোফরান, এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছাদেক, এ্যাডভোকেট আবদুল খালেক, এ্যাডভোকেট ফনীন্দ্র মুখার্জী, মোক্তার হাসান আলী প্রমুখ।

ফেনী অঞ্চলের জনগণের টাকায় ফেনী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেইসময় প্রথম ধাপে স্থানীয়ভাবে ২০ হাজার টাকা চাঁদা উঠেছিল। পরে নোয়াখালী জেলা বোর্ড দেয় ৫০ হাজার টাকা, কলিকাতা নিবাসী ফেনীর আমিরগাঁও’র জমিদার চন্দ্রীচরণ লাহা দেন ৪ হাজার টাকা, নোয়াখালীর জমিদার কুমার অরুণ চন্দ্র সিংহ বাহাদুর দেন ২ হাজার টাকা, সত্যেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ ১ হাজার টাকা, লক্ষীপুরের সাহেস্তা নগরের জমিদার প্যারীলাল রায় চৌধুরী দেন পাঁচশত টাকা, ফেনী বাঁশপাড়ার জমিদার পরিবারের চন্দ্র কুমার চৌধুরী দেন ১ হাজার টাকা।

প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অধ্যক্ষ ছিলেন বাবু বিরেন্দ্র লাল ভট্টাচার্য। ১৯২৬ সালে অবিভক্ত বাংলার গভর্ণর স্যার ল্যাণ্ডস হিউ ষ্টিভেনশন আই.সি.এস, সি আই. এস বর্তমান লাল দালানটি উদ্ভোধন করেন। পরবর্তীতে ১৯৬০-৬১ সালের দিকে কলেজের ডিগ্রী শাখা স্থানান্তরের জন্য ৯০ নং ফলেশ্বর মৌজায় প্রায় ৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। উক্ত অধীগ্রহণকৃত ভূমিতে বর্তমানে কলেজের একটি ছাত্রাবাস আছে। কলেজের জন্য অধিগ্রহণকৃত যায়গার কিছু অংশ পুণঃ অধিগ্রহনের মাধ্যমে ফেনী সদর হাসপাতাল, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসহ কিছু নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয় এবং অনেকাংশই সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে বেদখল হয়ে গেছে।

এছাড়াও বর্তমান ক্যাম্পাসটি সম্প্রসারণ করার জন্য জমিদার কালীচরণ নাথ, চণ্ডীচরণ লাহা এবং এনায়েত হাজারী প্রমূখ বেশ কিছু ভূমি দান করেন। ১৯৪৫ সালে কলেজে দুইটি বিষয়ে অনার্স ছিল এবং দুর্লভ বই সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে এই অঞ্চলকে ওয়ার জোন ঘোষণা করায় অনার্স বিষয় দুটি সহ কলেজের সার্বিক কার্যক্রম ব্রাহ্মণ বাড়ীয়ায় স্থানান্তরিত হয়। যার বর্তমান রূপ ব্রাম্মনবাড়িয়া সরকারী কলেজ। বিশ্বযুদ্ধ শেষে কলেজের কার্যক্রম ফেরত আসলেও বিভিন্ন কারনে সে অনার্স বিষয় দুইটি আর ফেরত আনা যায়নি। ১৯৬৩ সালে কলেজে বাণিজ্য বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বর্বর পাক হানাদার বাহিনী কলেজে তাদের ঘাটি স্থাপন করে লাইব্রেরির বই রান্নার কাজে ব্যবহার করে অনেক দুর্লভ বই নষ্ট করে দেয়। পাক বাহিনী মুক্তিকামী বাংগালীদের ধরে এনে কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মমভাবে হত্যা করত, যার স্বাক্ষ বহন করছে কলেজে সংরক্ষিত অডিটোরিয়ামের পূর্ব পাশের বৈধ্যভূমি। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে জানা যায় কলেজের অনার্স ভবনের পেঁছনে দক্ষিণ পশ্চিম কোনে আরেকটি বৈধ্যভূমি ছিল, যা সংরক্ষণ করা হয়নি।

১৯৭৯ সালের ৭ মে কলেজটি জাতীয়করণ অর্থাৎ সরকারী কলেজ হিসাবে অধিভুক্ত করা হয়। তখন কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে কর্মরত ছিলেন জনাব মজিবুর রহমান

১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষে কলেজে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স চালু হয়। পরবর্তীতে তারই ধারাবাহিকতায় ক্রমান্বয়ে আরো ১১টি বিষয়ে অনার্স চালু করা হয়। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষেবাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্স শেষ পর্ব চালু করা হয়। বর্তমানে এই প্রাচীনতম বিদ্যাপিঠে ১৫ বিষয়ে অনার্স ও মাষ্টার্স শেষ পর্ব এবং ১০ বিষয়ে মাষ্টার্স ১ম পর্ব চালু আছে। কলেজে ক্রীড়া শিক্ষক ও প্রদর্শকসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৭৫ জন শিক্ষক এবং সরকারী ও বেসরকারী মিলে ১৩ জন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী ও ৪৯ জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। বর্তমানে এই কলেজে প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে।

হাবিবুর রহমান

সদস্য সচিব, শতবর্ষপূর্তি উদযাপন পরিষদ

ও সহকারী অধ্যাপক, (২৭ তম বিসিএস)

ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ফেনী সরকারী কলেজ।

প্রাক্তণ ছাত্র, এইচ এসসি-৯৪ ব্যাচ, বাণিজ্য বিভাগ।


share:
Today
প্রিন্ট নিউজ
...
বিজ্ঞাপন
সময়
সর্বশেষ
➤ বরুড়া প্রতিদিনের ৬ষ্ঠ বর্ষ উপলক্ষে আনন্দ অনুষ্ঠান
➤ কুমিল্লা ০৮ (বরুড়া) আসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন'র মনোনয়ন পত্র দাখিল
➤ বরুড়ায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম'র বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন
➤ বরুড়ায় নৌকার হাল ধরলেন এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম
➤ বরুড়ায় ইউএনও'র নির্দেশে বাল্য বিবাহ বন্ধ হলো
➤ বরুড়া উপজেলা জনকল্যাণ সমিতি ঢাকা'র আয়োজনে মেধা বৃত্তি প্রদান
➤ বরুড়ায় মরহুম আবু তাহের ফাউন্ডেশন কর্তৃক অসুস্থ সাইফুল ইসলামের চিকিৎসায় আর্থিক অনুদান বিতরণ
➤ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা ০৮(বরুড়া) আসনে ৫ নেতার দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ
➤ ফরিদপুরে হত্যা মামলায় পলাতক প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
➤ ব্রাহ্মণপাড়ায় গোমতী চরে শীতকালীন সবজির সমাহার
➤ কুমিল্লায় অবরোধ উপেক্ষা করে চলবে কুবির নিজস্ব নীল বাস
➤ দেশের অব্যাহত অগ্রগতি থমকে দেওয়ার জন্যই বিএনপির আন্দোলন -কুমিল্লায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
➤ বিএনপি জামায়াতকে অগ্নি সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে নির্বাচনে আসার আহবান-এমপি বাহার
➤ সারা বিশ্বের চেয়ে বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে আছে- এলজিআরডি-মন্ত্রী
➤ কুমিল্লায় অবরোধের নামে অগ্নি -সন্ত্রাসী করলে কেউ ছাড় পাবে না-এমপি বাহার
➤ কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগর চার পাড়ে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে
➤ কুমিল্লায় বিশ্ব শিশু দিবস ও জাতীয় শিশু অধিকার সপ্তাহ উদ্বোধন
➤ কুমিল্লায় ভাতার দাবিতে ইন্টার্ন নার্সদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি
➤ বৃষ্টির আভাস থাকলেও গরমে বাড়তে পারে অস্বস্তি
➤ বিকেলে সংসদে উঠছে সাইবার নিরাপত্তা বিল
➤ ব্যবসায়ীর পৌনে ২ কোটি টাকা ছিনিয়ে নিলো প্রজন্মলীগ নেতা
➤ চিকিৎসা শেষে আজ দেশে ফিরছেন ড. মোশাররফ
➤ নিখোঁজের দুইদিন পর সেপটিক ট্যাংকে মিললো যুবকের লাশ
➤ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দ্বিতীয় দিনে প্রায় ২২ লাখ টাকার টোল আদায়
➤ কুমিল্লায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট থেকে স্ত্রী-মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে গৃহকর্তার মৃত্যু
© All rights reserved © 2022 swadeshjournal.news
Design & Developed by : alauddinsir