কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের আলোর দিশারী সুনীতি রানী বিশ্বাস
স্বদেশ জার্নাল → প্রকাশ : 4 Aug 2023, 1:09:41 PM
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুনীতি রাণী বিশ্বাস।। ১৫ বছর আগে এই স্কুলে আসেন। তখন স্কুল ছিলো ভাঙাচুরা।গ্রামে বিদ্যুত ছিলো না। সড়ক গুলো যেন ধান ক্ষেত। শিক্ষকরা এই স্কুলে বেশিদিন থাকতে চাইতেন না। স্কুলে ছাত্র কম ছিলো, তাদের বাড়িতে গিয়ে বুঝিয়ে আনতে হতো। সেই এলাকা এখন বদলে গেছে। পিচঢালা সড়ক হয়েছে। হয়েছে স্কুলের বহুতল ভবন। গ্রামে বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। স্কুলে শিক্ষার্থী বেড়েছে। স্থানীয় শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ করায় এখন বদলি কমেছে। বি- ক্যাটাগরির স্কুল এখন এ- ক্যাটাগরি হয়েছে। সুনীতি রাণী বিশ্বাসের আলোয় আলোকিত হয়েছে নোয়াপাড়া গ্রাম।
১৯৮৬ সালে যোগ দেন বরুড়ার খাজুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ৪ বছর সেখানে শিক্ষকতা করার পর ১৯৯০ সালে ট্রান্সফার হয়ে আসেন লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ১৬ বছর শিক্ষকতা করার পর ২০০৭ সালে প্রধান শিক্ষক পদায়নের পর যোগদান করেন চিতোষী রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ২০০৮ সালে আসেন নিজ গ্রামের পাশ্ববর্তী গ্রাম নোয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
স্কুলের বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা সুনীতি রানী বিশ্বাস বলেন,বিদ্যুতের জন্য পাশের চান্দিনা উপজেলার পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে গিয়ে দরখাস্ত দিয়েছি। তারপর এলাকায় বিদ্যুত এসেছে। এভাবে ছাত্র জোগাড়, স্কুল ভবন করা ও সড়কের বিষয়ে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করতে হয়েছে। আমাদের উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী উপজেলা কর্মকর্তা জন প্রতিনিধি ও স্কুল কমিটির সবার সহযেগিতা কাজ গুলো করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ৩৭বছর কর্মজীবন শেষে ২০২৪সালের ফেব্রুয়ারি তিনি অবসরে যাবেন। অবসরে কথা মনে হলে তার চোখ জলে ভেসে যায়। সকালে আর স্কুলে আসার তাড়া থাকবে না। কেউ তার নিকট ছুটির দরখাস্ত নিয়ে আসবে না।
শিক্ষক জীবনের আনন্দের স্মৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, তার হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারা সমাজ আলোকিত করছে। পথে দেখা হলে তারা পা ছুঁয়ে সালাম করেন।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. মুহতাছিম বিল্লাহ বলেন, চাকরি জীবনে এমন প্রধান শিক্ষক আর পাইনি। তিনি একজন গোছানো মানুষ। তার থেকে অনেক কাজ শিখেছি।
স্কুল পরিচালনা কমিটির প্রাক্তন দুই বারের সভাপতি ও দাতা সদস্য ডা.দুলাল ভৌমিক বলেন,আমি দীর্ঘদিন এই স্কুলের সাথে জড়িত। এই প্রধান শিক্ষক খুবই পরিশ্রমী। তিনি উপজেলায় ২০১০ ও ২০১৫ সালে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকার পুরস্কার পান। তার বিদায় আমাদের জন্য কষ্টের।
share: