ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নৌকা বাইচ
স্বদেশ জার্নাল → প্রকাশ : 7 Jul 2024, 12:28:20 AM
‘‘ সখি
করি গো মানা, কালো জলে ঢেউ দিওনা গো
সখি কালো জলে ঢেউ
দিও না’’
উলেস্নখিত গানের কলিটি ইংরেজ আমলে তিতাস
নদীর নৌকা বাইচের একটি গানের অংশ। সুদূর অতীত কাল থেকে মনসা পূজা উপলক্ষ্যে ভাদ্র
মাসের প্রথম তারিখে তিতাসে এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ অনুষ্ঠানটির
প্রাচীনতা সর্ম্পকে ত্রিপুরা জেলা গেজেটীয়ার থেকে জানা যায় যে, ১৯০৮ সালে অনুষ্ঠিত নৌকা বাইচ ছিল একটি ঐতিহাসিক প্রতিযোগিতা। ঐ
প্রতিযোগিতায় আখাউড়া, আশুগঞ্জ, চান্দুরা
এবং কুটির ইংরেজ পাট ব্যবসায়ীরা বহু সোনার মেডেল দিয়ে নৌকা বাইচ প্রতিযোগীদের
পুরস্কৃত করেছিলেন। তাছাড়া কুমিলস্না জেলা গেজেটীয়ার থেকে বৃটিশ শাসনামলে নৌকা
বাইচ সর্ম্পকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক মিঃ ওয়ারস এর রিপোর্টের
বর্ণনায় আরো জানা যায় যে, এখানে নিয়ম-দস্ত্তও মাফিক কোন
নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হতো না। সাধারণ একটি নৌকা আর একটি নৌকাকে চ্যালেঞ্জ দিত এবং
দাঁড়িরা তালে তালে দাঁড় ফেলে পালস্না দিয়ে নৌকা চালিয়ে নিয়ে যেত। একটি নৌকা আর
একটি নৌকাকে পেছনে ফেলে দিতে পারলেই তার জিত হতো। ১৯০৮ সালে আ্খাউড়ার কয়েকটি পাট
কোম্পানীর দেওয়া স্বর্ণ পদকের জন্য দস্ত্তরমত নৌকা বাইচ হয়েছিল এবং তাতে এমন ভীষণ
উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল যে, পুলিশকে বহু কষ্টে শামিত্ম
রক্ষা করতে হয়েছিল।
ত্রিশের দশকেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর
সংলগ্ন তিতাসের বুকে অতি জাঁকজমকের সাথে গণ উৎসব এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হতো। বিজয়ী
নৌকাকে মেডেল, কাপ, শীল্ড,
পিতলের কলস, পাঁঠা ইত্যাদি ট্রফি দেয়া
হতো। নৌকা বাইচ উপলক্ষ্যে লঞ্চ, বিভিন্ন ধরনের নৌকা,
কোষা, কলাগাছের ভেলা, এমন কি মাটির গামলাকে পযমর্ত্ম রং-বেরঙের কাগজের ফুল ইত্যাদি দিয়ে
বিচিত্র সাজে সজ্জিত করা হতো।
share: