ড্রাগন ফল চাষে সফল নারী নাছিমা বেগম
স্বদেশ জার্নাল → প্রকাশ : 13 May 2022, 9:52:18 AM
‘‘আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোন ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর”।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার এই উক্তি সাহসী নারী নাছিমা বেগম কৃষি কাজের মধ্যদিয়ে তা প্রমান করে দিয়েছেন। কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার বরকরই ইউনিয়নের চাঁদসার গ্রামের প্রবাসী মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী নাছিমা বেগম। ২০১৯ সালে তার স্বামী বিদেশ থেকে ১০ লাখ টাকা দেশে পাঠান বাড়িতে বিল্ডিং তৈরীর জন্য। সাহসী এই নারী বিল্ডিং তৈরী না করে চান্দিনা উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ সুলতান আহমেদের পরামর্শ নিয়ে প্রায় দেড় একর জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করেন। এর পরের বছর থেকেই ড্রাগন ফল সংগ্রহ করেন। নাছিমা বেগম জানান এই পর্য্ন্ত তার বাগানে ১৪ লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে। তবে গত বছর থেকে এই বছর অর্থাৎ ২০২২ সাল পর্য্ন্ত প্রায় ১৮ লাখ টাকার ড্রাগন ফল ও ড্রাগন ফলের চারা বিক্রি করেছেন। গাছে ফুল ফোটার পর ৭-৮ মাস ধরে গাছে ফল আসে। আশা করছি আরো কয়েক বছর বাগান টিকে থাকলে আমি আর্থিকভাবে আরো লাভবান হব। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুল হক রোমেল, নাছিমা বেগমের আগ্রহ দেখে তাকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সহযোগীতা করে আসছেন। ড্রাগন ফলের বাগানে জৈব সার নিশ্চিতভাবে ব্যবহারের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নাছিমা বেগমকে একটি ভার্মি কম্পোষ্ট’র প্রদর্শণী প্রদান করেন। কৃষি অফিসার বলেন- ড্রাগন ফলের গাছে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ খুবই কম। যে কোন ফলের চেয়ে ড্রাগন ফলের চাষ লাভজন। চান্দিনা উপজেলায় যে কোন জনগন ড্রাগন ফলের চাষ করতে আগ্রহী হলে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ হতে প্রযুক্তিগত পরামর্শ অব্যাহত থাকবে।
কবির ভাষায় সাহসী কৃষাণী নাছিমা বেগমকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলবো -‘‘এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল, নারী দিল তাহে রূপ-রস-মধু-গন্ধ সুনির্মল। সবশেষে বলতে চাই -বাংলার মায়েরা কৃষিতে এগিয়ে আসলে বাংলার কৃষি আরো বহুগুণে সমৃদ্ধ হবে।
মো: মহসিন মিজি
উপসহকারী কৃষি অফিসার (সংযুক্ত)
share: